z
অবশেষে অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে অফশোর ব্যাংকিং করছে এমন ব্যাংকগুলোকেও নতুন করে অনুমোদন নিতে হবে। সোমবার এ-সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এছাড়া অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট বন্ধ, সম্প্রসারণ বা বন্ধসহ যেকোনো ধরনের পরিবর্তন আনতে হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। নীতিমালাটি জারি হওয়ার পর থেকেই কার্যকর হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাকা সম্পূর্ণ বিদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যাংকিং কার্যক্রম করা যাবে। এক্ষেত্রে ঋণ বিতরণ ও আমানত নেওয়া যাবে। কিন্তু যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি নিতে হবে।
নীতিমালায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের পরে প্রতিটি ব্যাংককে একটি নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। নীতিমালাটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নির্ধারণ করবে।
অফশোর ব্যাংকিংয়ে কোনোভাবেই ব্যাংকের �নস্ট্র হিসাব� থেকে অর্থ স্থানান্তর করা যাবে না। মূল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে কোনো হিসাবও সমন্বয় করা যাবে না। ব্যাংকের রেগুলেটরি মূলধনের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ অফশোর ব্যাংকিংয়ে নেওয়া যাবে প্রয়োজনে। অফশোর ব্যাংকিং সেবা ব্যাংকসংশ্লিষ্ট কেউ নিতে পারবে না।
অফশোর ব্যাংকিং বন্ধের সময়ে মোট দায়ের চেয়ে ব্যাংকিং সম্পদ কোনোভাবেই ৭৫ শতাংশের নিচে হতে পারবে না। অফশোর ব্যাংকিং চালু করার অনুমোদনের পরে সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এছাড়া একটি হিসাব খুলতে হবে অফশোর ব্যাংকিং পরিচালনা করতে।
এর সঙ্গে প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের বেশকিছু শর্ত অফশোর ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করে নীতিমালাটি চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালের একটি সার্কুলারের মাধ্যমে বাংলাদেশে অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হয়। দেশে কার্যরত ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেওয়ার আলাদা ইউনিটের নামই হলো অফশোর ব্যাংকিং।
এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ ছয় শতাংশ সুদে ঋণ নেওয়া নিতে পারেন ব্যবসায়ীরা। এর তহবিল বিদেশ থেকে সংগ্রহ করতে হবে বলে তখন শর্ত দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে অনেক ব্যাংকই অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু এ কার্যক্রম একসময়ে বেশ লাভজনক হলেও বর্তমানে কিছু দুষ্ট ব্যাংকার এটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ব্যাংকের ক্ষতি করছে। নীতিমালা না থাকায় কোনো ধরনের জবাবদিহিতার আওতায় ছিল না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জুন শেষে অফশোর ব্যাংক খাত থেকে ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৮ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা, আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে যা ২৪ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি।